অধ্যায় ৪: রেওয়ামিল

যে সকল লেনদেন রেওয়ামিলে অন্তর্ভুক্ত হয় না:
প্রারম্ভিক উদ্বৃত্ত:
প্রারম্ভিক নগদ তহবিল বা হাতে নগদ
প্রারম্ভিক ব্যাংক জমা
প্রারম্ভিক দেনাদার
প্রারম্ভিক পাওনাদার
প্রারম্ভিক প্রাপ্য হিসাব
প্রারম্ভিক প্রদেয় হিসাব
সমাপনী উদ্বৃত্ত:
সমাপনী মজুদ পণ্য
অব্যবহৃত মনিহারি/সাপ্লাইজ
অন্যান্য:
সম্ভাব্য দায়
সম্ভাব্য সম্পদ
আনুমানিক দায়
আনুমানিক সম্পদ
অনিশ্চিত হিসাব (যদি হিসাবের গরমিল মেলাতে সাময়িকভাবে ব্যবহার করা হয়)
১️⃣ চলতি সম্পদ: যে সমস্ত সম্পদ এক বছরের মধ্যে নগদে রূপান্তরযোগ্য বা ব্যবহারযোগ্য।
২️⃣ দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ: যে সম্পদ এক বছরের বেশি সময় ধরে কোম্পানি ব্যবহার করে এবং সহজে নগদে রূপান্তরযোগ্য নয়।
৩️⃣ চলতি দায়: যে সমস্ত ঋণ বা বাকি অর্থ ১ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
৪️⃣ দীর্ঘমেয়াদী দায়: যে সমস্ত ঋণ বা বাকি অর্থ ১ বছরের পর পরিশোধ করতে হবে।
৫️⃣ মূলধন: কোম্পানির মালিকদের অংশ বা কোম্পানিতে যে অর্থ আছে।
৬️⃣ জাতীয় আয় / আয়: কোম্পানি কত টাকা উপার্জন করছে।
৭️⃣ মুনাফা: আয় থেকে সব ব্যয় বাদ দিয়ে যা বাকি থাকে।
৮️⃣ জাতীয় ব্যয়: দৈনন্দিন ব্যবসায়িক খরচ যেমন বেতন, বিদ্যুৎ, ভাড়া।
৯️⃣ মূলধন ব্যয়: দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ ক্রয় বা উন্নয়নের জন্য খরচ।
রেওয়ামিল

মূলধন২,০০,০০০
প্রাপ্য হিসাব৬০,০০০
প্রাপ্তিযোগ্য মুদ্রণ পত্র১,০০,০০০
কলকারখানা ও যন্ত্রপাতি৪০,০০০
আসবাবপত্র৪৫,০০০
নগদ অর্থ১৫,০০০
প্রদেয় হিসাব৩০,০০০
পণ্য ক্রয়১,২০,০০০
পণ্য বিক্রয়২,৭৫,০০০
উত্তোলন৩০,০০০
মজুরি
অফিস ব্যয়
মোট৫,১৫,০০০৫,১৫,০০০
উপরের রেওয়ামিল খানি সামঞ্জস্যকৃত এবং অসমঞ্জস্যকৃত হিসাবে মিলানো হয়েছে। পরবর্তীতে নিরীক্ষার ফলে ভুলত্রুটি ধরা পড়ে:

১️⃣ মজুরির সংযোজন বাদ পড়ায় ২০,০০০ টাকা মজুরি হিসাবে ডেবিট করা হয়েছে।
২️⃣ মালিক কর্তৃক কারবারে ২৫,০০০ টাকা অতিরিক্ত মূলধন বিনিয়োগের বিবরণ হিসাবে ক্রেডিট করা হয়েছে।
৩️⃣ প্রাপ্তি হিসাবের যোগফল ৫,০০০ টাকা বেশি দেখানো হয়েছে।
৪️⃣ বাকি হিসাবের ১৫,০০০ টাকা প্রাপ্যতার সংযোজন বাদ পড়েছে।

নির্দেশনা:
(ক) উপরের তথ্যসমূহের ভিত্তিতে রেওয়ামিল প্রস্তুত কর।
(খ) সংশোধনী জাবেদা রেওয়ামিল প্রস্তুত কর।
(গ) সংশোধনী পরবর্তী মোট চলতি সম্পদ ও মোট চলতি দায়ের পার্থক্য নির্ণয় কর।
(ঘ) ৩ নং প্রশ্নের সমাধান।


গার্হস্থ্য এন্টারপ্রাইজ
সংশোধনী জাবেদা তালিকা
তারিখ হিসাব নির্ণয়ের ব্যাখ্যা ডেবিট টাকা ক্রেডিট টাকা
২০১৯
সেপ্টে–৩০
(১) যন্ত্রপাতি হিসাব
মজুরি হিসাব
(মজুরি হিসাবের বাদ যাওয়া ভুল সংশোধন করা হলো)
২০,০০০ ২০,০০০
(২) মূলধন হিসাব
প্রাপ্য হিসাব
(মূলধন হিসাবের যোগ হওয়া ভুল সংশোধন করা হলো)
২৫,০০০ ২৫,০০০
(৩) বিক্রয় হিসাব
মুদ্রণ হিসাব
(বিক্রয় হিসাবের যোগ হওয়া ভুল সংশোধন করা হলো)
৫,০০০ ৫,০০০
(৪) বাকি হিসাব
ক্রয় হিসাব
(ক্রয় হিসাবের বাদ যাওয়া ভুল সংশোধন করা হলো)
১৫,০০০ ১৫,০০০
মোট ৬৫,০০০ ৬৫,০০০

ভুলের ধরন:
১️⃣ বেদাখিলার ভুল (Vedakhila Vul): প্রাথমিক হিসাবের বই থেকে খতিয়ানে হিসাব স্থানান্তরের সময় ভুল হিসাব বা ভুল কলামে লেখা।
👉 উদাহরণ: নগদ ২০,০০০ টাকা পাওয়া গেছে, কিন্তু প্রাপ্য হিসাব অন্য কোনো হিসাবের ক্রেডিটে লেখা হয়েছে।

২️⃣ নীতিগত ভুল (Nitigoto Vul): হিসাবরক্ষণের নীতিমালা অনুযায়ী লেনদেন সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ না করার কারণে হওয়া ভুল।
👉 উদাহরণ: বিলম্বিত বিজ্ঞাপনকে সম্পত্তি হিসেবে না দেখিয়ে সরাসরি ব্যয় হিসেবে লেখা।

মূল ধারণা:
রেওয়ামিল এমন একটি তালিকা যেখানে খতিয়ানের সব ব্যালেন্স (সম্পদ, দায়, মূলধন, আয়, ব্যয়) একত্র করে যাচাই করা হয় যে, মোট ডেবিট = মোট ক্রেডিট কি না।
রেওয়ামিলের উদ্দেশ্য হচ্ছে লেনদেন রেকর্ডে কোন প্রকার গাণিতিক ভুল আছে কি না তা শনাক্ত করা।

← সব অধ্যায় দেখুন